গতকাল নন্দীগ্রাম দিবসে তৃণমূলের উত্থানের ঘাঁটি নন্দীগ্রামেই শুভেন্দু অধিকারীর স্বাধীন সভা এবং তার সাথে একেরপর এক বিধায়কের দল ছাড়ার ইঙ্গিত অনেক কিছু স্পষ্ট করে দিলো।বিধানসভা ভোট যত এগিয়েছে আসছে তৃণমূলে ভাঙনের সম্ভাবনা ততো তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। কাল নন্দীগ্রাম দিবসে তৃণমূলের এই রাজ্যে ক্ষমতায়নের যে আঁতুর ঘর, সেই সেই সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের মাটিতেই এবার পতনের এর সম্ভাবনা জোরালো হয়ে দাঁড়ালো শুভেন্দু অধিকারীর সভার মধ্যে দিয়ে। শুভেন্দুর ” নন্দীগ্রাম আন্দোলন কারো একার নয় “, এই ইঙ্গিত পূর্ণ বক্তৃতা, সাথে তৃণমূলের কোনোরকম ব্যানার্ বা পতাকা ছাড়াই সভা চালানো যেন একটা রাজনৈতিক থ্রেট হয়ে দেখা দিলো তৃনমূলের দুর্গে।
একি সাথে সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রাম এর বিধায়ক দের মধ্যেও দল ছাড়ার সমস্ত সম্ভাবনারি দেখা মিললো।
সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন প্রয়োজন হলে অবশ্যই অন্য দলের দিকে পা বাড়াবেন।
নন্দীগ্রামের দাপুটে বিধায়ক এবং বাংলার পরিবহন মন্ত্রীর স্বাধীন সভা এবং তৃণমূল বিরোধী কথাবার্তাও ঝড়ের আগের থমথমে পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সম্প্রতি তৃণমূল বিরোধী সুরে সুর মিলিয়েছিলেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির বিশ্বাস,আরামবাগ এর বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা এবং ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্তও। এমনকি তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা এবং সংগঠন নির্মাতা প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধেও শুরু হয়েছে দলের অন্দরে বিদ্রোহ।
শীলভদ্র দত্ত প্রশান্ত কিশোরকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, বাইরে থেকে এসে কোনো রকম রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়াই তাকে হেনস্থা করছে প্রশান্ত কিশোর।
বাইরের কেউ এভাবে এসে তাকে অবাঞ্চিত প্রশ্ন করলে এবং কোনো কথা বললে তিনি শুনতে রাজি নন।
মিহির বিশ্বাস আগেই জানিয়েছেন আর দলে ফিরছেন না, অন্য দলে যাবেন কিনা শুভাকাঙ্খীদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করবেন।
শুভেন্দু জানিয়েছেন কোথায় হোঁচট খাচ্ছেন, কোথায় তার রাস্তা গর্তে ভর্তি সবই জানাবেন তবে পরে। এই তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় শুভেন্দুকে পাল্টা দিয়েছেন। এই দিন তিনি বলেন এইধরণের বক্তব্য সাহিত্যে মানায়, রাজনীতিতে স্পষ্টতা প্রয়োজন।
অধিকারীর মতো তৃণমূলের বিরাট বড়ো নামের এমন বক্তব্য যেন একরকম নিশ্চিত করে দিয়েছে তৃণমূলের ভাঙন। এবার কি সত্যিই তাহলে বিধানসভা ভোটে বড়ো ভাঙন ধরতে চলেছে সবুজ দুর্গে! সে প্রশ্নের উত্তর দেবে সময়!
প্রতিবেদনে-শশাঙ্ক