রাজ্য রাজনীতির ময়দানের নয়া খবরের শিরোনামে আবার চলে এসেছেন প্রশান্ত কিশোর। ভোট ব্যাঙ্কের খেলায় বর্তমানে দেশের একনম্বর মাথা যার, সেই প্রশান্ত কিশোর এবং তার দল এখন তৃণমূলের ঘর গোছাতে ব্যস্ত। আর সেই খেলাতেই পি.কে এন্ড কোং. এখন মেদিনীপূরের দরজায় দরজায় কড়া নেড়ে চলেছেন। না, যেকোনো সাধারন মানুষের দরজায় যাচ্ছেন না তাঁরা। তাঁরা যাচ্ছেন বিরোধী অথবা দলত্যাগী নেতানেত্রীদের দরজায়। আর এখান থেকেই উঠেছে প্রশ্নোত্তর,জল্পনার পর্ব। প্রশ্ন দু’ধরনের: (১) তৃণমূল শিবিরে কি স্বচ্ছ নেতানেত্রীর অভাব পড়লো,যে বাইরে থেকে বিরোধী মুখ ধরে আনতে হচ্ছে? নাকি (২) বিরোধী দলগুলির অন্দরমহলে ভাঙন ধরিয়ে ভোট জেতাই এবার প্রশান্ত তথা তৃণমূলের প্রধান লক্ষ?
এব্যাপারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিকে জিঞ্জাসা করা হলে তিনি বলেন: “বিরোধী দলগুলির নেতাকর্মীরা অনেকেই তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়েছেন। তাদের সাথেই পি.কে.’র টিম যোগাযোগ চালাচ্ছে”। তবে একথার সত্যতা কতটা তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে যখন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিরোধী নেতা বলেন যে প্রশান্ত কুমারের দলই তাঁর সাথে প্রথম যোগাযোগ করেন এবং দেখা করতে জোরাজুরি করায় তিনি দেখা করেন। তিনি আরও বলেন, “কথা শুনে মনে হলো, ওঁদের কাছে জেলার অনেক খোঁজখবরই আছে”। যদিও তিনি বলেন যে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বিজেপি’র জেলা সভাপতি শমিত দাশের মুখে শোনা গেলো প্রত্যয়ের সুর। তিনি বলেন, “তৃণমূল দল ভাঙনের চেষ্টা করছে কিন্তু পারবে না”। জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খানের বক্তব্যও এক, “দল ভাঙানোর চেষ্টা করতেই পারে তবে তৃণমূল সুবিধে করতে পারবে না”।
তৃণমূলের নবগঠিত রাজ্য সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠক হয় অগষ্টে। শোনা যায় সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় দলের রদবদলের ব্যাপারে, এবং পি.কে. এর দলকে এই কাজের ভার দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের প্রধান রদবদল বলতে তিনজন কো-অর্ডিনেটরের পদই বদল হয়েছে। এরা হলেন – রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া, কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা, এবং খড়গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় তৃণূমূলের ব্লকস্তরে রদবদল হওয়ার কথা। জেলা থেকে সেই প্রস্তাব ইতিমধ্যেই রাজ্যে চলে গেছে। এখন শেষ নির্ণয় রাজ্যের নেতৃত্বের হাতেই বলে শোনা যাচ্ছে। তবে রাজ্যে প্রস্তাব যাওয়ার পরপরই জেলায় প্রশান্ত কিশোর এবং তার দলের পৌঁছে যাওয়ায় এটা স্পষ্টই যে প্রস্তাবে সবুজ সংকেত মিলেগেছে।
তৃণমূলের প্রাক্তন নেতাদের দল-ওয়াপ্সি করানোর ভাবনা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে যে বর্তমান দলের মেরুদন্ড কি ততটাও আর শক্ত নেই? আর ফিরে যদি আদৌ কেউ আসে এমতাবস্থায় কতটা পার্থক্য তারা গড়ে তুলবে সেটাই দেখার।