প্রথমে জানতে হবে শরীরে ফ্যাটের পরিমাণ কেন বৃদ্ধি পায়। অনেকেই খাওয়া-দাওয়ার পরেই ঘুমিয়ে পড়েন তাদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রবণতা থাকে শরীরে ফ্যাট বৃদ্ধি পাওয়ার। দীর্ঘক্ষণ ধরে যারা বসে কাজ করেন তাদেরও ধীরে ধীরে পেটে চর্বি জমার মতো সমস্যা দেখা যায়। অতিরিক্ত ফ্যাট শুধুমাত্র সৌন্দর্য্য নষ্ট করে না। শরীরে ডেকে আনতে পারে নানা রোগব্যাধিও। চিকিৎসকদের মতে শরীরে বাড়তি চর্বি জমার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ এবং শরীরচর্চা সুস্থ শরীর বজায় রাখতে সাহায্য করে।
শরীরে মেদ জমার কারণ গুলি জেনে নিন:
★যে ব্যক্তি অতিরিক্ত শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খান। যেমনঃ ভাত, পোলাও, বিরিয়ানি, পরোটা, লুচি, মিষ্টি এবং সফট ড্রিংসের প্রতি ঝোঁক রয়েছে যাদের, তাদের শরীরে মেদ জমার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
★ যে ব্যক্তি খাওয়ার পরেই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের খাবার সঠিকভাবে হজম হয়না। সঞ্চিত শক্তি খরচ হয় না ফলে চর্বি জমার সমস্যা দেখা যায়।
★ অনেকেই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ধরে চেয়ার টেবিলে কাজ করেই কাটিয়ে দেন। সেক্ষেত্রে কায়িক পরিশ্রমের অভাবে শরীরে মেদ জমার সমস্যা দেখা যায়।
★ যারা অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার যেমন মাখন, পনির, এবং ফাস্টফুডের ভক্ত। তাদের শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বাসা বাঁধতে পারে।
শরীরের বাড়তি চর্বি থেকে কি কি ধরনের রোগ হতে পারে:
শরীরের বাড়তি চর্বি বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত চর্বির ফলে পরিশ্রম করার শক্তি কমে যায়। ফলে ফ্যাটি লিভার অর্থাৎ লিভারে চর্বি জমার মতো সমস্যা দেখা যায়। ডায়াবেটিস, হার্নিয়া, ব্লাড প্রেসার এমনকি হৃদরোগের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এছাড়া হরমোনজনিত নানা জটিলতাও দেখা দেয়।
শরীরের ফ্যাট কমাবেন কিভাবে:
★ একেবারে বেশি করে খাবার না খেয়ে বারে বারে অল্প অল্প করে খাওয়া প্রয়োজন। প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর কিছু খাবার খেতে পারেন।
★ অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার না খেয়ে শাকসবজি খাদ্য তালিকায় যুক্ত করুন।
★ খাদ্যতালিকায় ফলও রাখতে পারেন। খোসাসহ ফল খান যেমন: পেয়ারা, আমড়া শসা এসব ফলে জলের পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা মিটবে।
★ প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে চাইলে মাংসের চর্বি অংশ বাদ দিয়ে খান।
★আলু খাদ্য তালিকা থেকে কিছুটা পরিমাণ কমানো প্রয়োজন।
★ যেকোনো ধরনের তেলে ভাজা বা ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
★ প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে।
প্রয়োজন শরীরচর্চা:
শরীরের ফ্যাট কমাতে খাবার নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি শুরু করতে হবে শরীরচর্চা। নিয়মিত শরীরচর্চা শরীরের মেদ কমাতে সাহায্য করে।
বিভিন্ন আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শরীরচর্চার মধ্যে সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, জোরে হাঁটা, স্কিপিং এগুলি শরীরের বাড়তি চর্বি ঝরানোর ক্ষেত্রে খুবই উপকারী। এছাড়া লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ির ব্যবহার এবং ফ্লাইওভারের নিচ থেকে হেঁটে দ্রুত উপরের দিকে ওঠার মতো কায়িক পরিশ্রম শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
উপরোক্ত বিষয়গুলি মেনে চললে শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে সুস্থ শরীর পাওয়া সম্ভব।
প্রতিবেদনে: তিথি দাস