দিল্লী হিংসার মামলায় গ্রেফতারি শুরু করেছে কেন্দ্র । অদ্ভুত ভাবে চার্জসিটে পেস করা হয়েছিল সীতারাম ইয়েচুরির মতো একাধিক বাম নেতার নাম ! এতে স্পষ্টতই এনআরসি, সিএএ বিরোধী দের ওপর রাজনৈতিক বদলা এবং কূটনৈতিক চক্রান্তের আভাস পেয়ে রাগের ফুঁসছে গোটা দেশ । এর মধ্যেই গ্রেফতারের জল পৌঁছলো জেএনইউ এর দরজায় ! কাল রাতেই জেএনইউ এর দাপুটে ছাত্রনেতা “উমর খালিদ” কে গ্রেফতার করলো দিল্লী পুলিশ ! নিঃসন্দেহে জেএনইউ এর ছাত্র রাজনীতিতে উমর খালিদ বিশাল বড়ো নাম ।
দিল্লী পুলিশের শাখা থেকে জানানো হলো “বেআইনি কার্যকলাপ নিরোধক আইন” অর্থাৎ রাষ্ট্র বিরোধী ইঁদুর দের ধরার জন্য সেই একি ইঁদুর কল ” UAPA” !
ফেব্রুয়ারীর তেইশ তারিখ থেকেই দিল্লীতে ধ্বংস লীলা শুরু হয় । মারা যায় প্রায় ৫৩ জনের মতো মানুষ, আহত হয়ে ৫৮১ জন । এর মধ্যে ৯৭ জনের ওপর বন্দুক চালানো হয়েছিল । যার পিছনে নাম জড়িয়ে ছিল একাধিক বিজেপি নেতার । ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোস্টেও দেখা গিয়েছিলো তাদের । অথচ “অশোক স্তম্ভের ” সিংহর মুখ অন্য দিকে ঘোরানো এর বেলা ! উমর খালিদ সহ বিভিন্ন “এনআরসি” “সিএএ” বিরোধী আন্দোলনের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদেরই এর পিছনে প্রধান হাত বলে আগেই বয়ান দেয় কেন্দ্র পন্থী দিল্লী পুলিশ!
শাহীন বাগের প্রতিবাদ মঞ্চে কেনো ভাষণ দিলেন উমর খালিদ, এও নিয়েও তাকে দফায় দফায় জেরা করে শুরু করে বাঘা বাঘা দিল্লির তদন্তকারী অফিসার গণ ।
দিল্লী পুলিশের বক্তব্য , উমর খালিদ এবং আম আদমি পার্টির কাউন্সিলার তাহির হুসেন একসাথে গোটা ঘটনাটা পরিকল্পনা এবং কার্যকর করেছেন ! এটা যে অনেকটা অন্যায় করার পড় পাড়ার লোকের হাতে ধরে পড়ে মার খেয়ে দাপুটে বাবার কাছে এসে নালিশের চার্জশিটের মতো শোনায়, তা বোঝাই যায় ! সেই কারণেই একজন কৃতি ছাত্রের গ্রেফতারি মানতে পারছেনা অনেকেই ।
এই ঘটনা অবশ্য নতুন না । ২০১৬ তেও দিল্লী পুলিশ জেএনইউ এর ক্যাম্পাসে ভারত বিরোধী স্লোগান দেবার জন্য গ্রেফতার করেছিল ।
একি মামলাতে উমর খালিদ এর শরিক ছিল নয়া মার্ক্সবাদী, সিপিআই শ্রেষ্ঠ কানহাইয়াও ! মোট দশ জন পড়ুয়া এই সময় গ্রেফতার হয় জেএনইউ থেকে ।
ছাত্র গ্রেফতারিতে একদিন যে ভারত পৃথিবীতে নজির গড়তে চলেছে তা বোঝাই যায়।
দিল্লী হিংসায়, বিরোধী দের জেলে ভর অভিযান তো শুরু হয়ে গেলো উমর খালিদের গ্রেফতারির সাথে সাথেই । এমনকি
এই মামলার চার্জ সিট্এ বাদ যায়নি সীতা ও রামের নামও।
খোদ সীতারাম ইয়েচুরির নাম চার্জ সিটে দেখে আকাশ থেকে পড়ছিলেন গণতন্ত্র প্রেমীরা । শেষ মেস চার্জশিট থেকে গতকাল কাটা হলো সীতারাম ইয়েচুরির নাম। তবে এখনো রয়েছেন যোগেন্দ্র যাদব এবং দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ, ডকুমেন্টরি ফিল্ম মেকার রাহুল রয় পর্যন্ত !
উমর খালিদ কে দিয়েই কি তাহলে আরম্ভ হলো গ্রেফতারির! বাদ যাবেন না তারাও? উঠছে প্রশ্ন ! এই ঘটনায় যখন মাথায় হাত ভারতবাসীর সেই সময় “চন্দ্রবিন্দু ” ব্যান্ডের দুটো ট্রাজিক লাইন তো বানতাহীহে!
” ব্রিলিয়ান্ট ছেলে সেন্ট্রাল জেলে মারে মশা
তব মুকুট পড়িল পদতলে হায় একি দশা! “
প্রতিবেদনে -শশাঙ্ক