দেশের সমস্ত টিভি চ্যানেলগুলোতে অপ্রয়োজনীয় খবর দেখিয়ে বেড়াচ্ছে মিডিয়া! কৃষক বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাকে তারা বারবার এড়িয়ে যাচ্ছে কেন? প্রশ্ন তুললেন কবি জাভেদ আখতার। সাম্প্রতিক লোকসভায় যে তিনটি কৃষক বিল পাশ হয়েছে, তাতে দেশজুড়ে বিক্ষোভে পথে নেমেছেন কৃষকেরা। এক বিরাট প্রশ্নচিহ্নের মুখে এখন তাঁদের ভবিষ্যত্। কারণ, কৃষক না থাকলে মানুষ বাঁচবে না। কিন্তু জাতীয় টিভি চ্যানেলগুলো ফোকাস পয়েন্টটাই অন্যদিকেই ঘুরিয়ে রেখেছে তাদের টিআরপি বাড়ানোর জন্য। যেদিকে ক্যামেরা থাকার কথা, সেদিকে না থেকে, এনসিবি দপ্তরের সামনে কে গাড়ি থেকে ওঠানামা করলেন বা বিমানবন্দরে কার মাথা কতটুকু দেখা গেল সেসবদিকেই ক্যামেরা তাক করে বসে রয়েছে মিডিয়া। বুদ্ধিজীবী ছাড়াও দেশের সাধারণ মানুষেরাও সুর চড়িয়েছেন টিভি চ্যানেলদের বিরুদ্ধে। এছাড়াও দেশের অনেক নামজাদা সাংবাদিকও সুর চড়িয়েছেন বিরুদ্ধতায়। আর আজ সেই একই অভিযোগের পুনরাবৃত্তি জাভেদ আখতারের টুইটে। ‘যদি করণ জোহর তাঁর পার্টিতে কোনও কৃষককে আমন্ত্রণ জানাতেন, তাহলে সম্ভবত আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য পরিস্থিতিটা অনেকটা সহজ হত। তাদেরকে করণ জোহরের পার্টি ও কৃষকদের মধ্যে কাউকে একজনকে বেছে নিতে হত না! এখন মনে হচ্ছে, করণের পার্টিটাই আমাদের চ্যানেলগুলোর পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থান নিয়েছে।’
গত বছর জুলাই মাসে একটি পার্টি হয়েছিল পরিচালক ও প্রযোজক করণ জোহরের বাড়িতে। তারই একটি ভিডিও ইতিমধ্যে দেখানো হয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। আর সেই ভিডিওটির কথা মাথায় রেখেই জাভেদ আখতারের এই টুইট। এবং যাকে ‘মাদক পার্টির’ প্রামাণ্য নথি হিসেবে এনসিবি-এর দপ্তরে জমা দিয়ে করণের নামে মামলা দায়ের করেছেন শিরোমণি অকালি দলের নেতা মনজিন্দর সিং সিরসা। ভিডিওয়ে অর্জুন কাপুর, মালাইকা অরোরা, সস্ত্রীক শাহিদ কাপুর, রণবীর কাপুর, ভিকি কৌশল, বরুণ ধাওয়ান ও তাঁর বান্ধবী, দীপিকা পাড়ুকোন, পরিচালক অয়ন মুখার্জি এবং জোয়া আখতারকে দেখা যায়। সিরসার দাবি, তাঁরা সবাই নেশায় বুঁদ হয়ে ছিলেন।
সম্প্রতি একটি বিবৃতিতে ভিডিওটি নিয়ে জবাবদিহি দিয়েছেন করণ। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘কিছু চ্যানেল, সংবাদপত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়া ২০১৯-এর ২৮ জুলাইয়ের ভিডিওটির ভুল ব্যাখ্যা করছে। সেদিন আমার বাড়ির পার্টিতে মাদক বা কোনও নিষিদ্ধ বস্তুর ব্যবহার হয়নি। তখনও নিজের অবস্থান স্পষ্ট ছিল, যা আজও দিতে বাধ্য হচ্ছি।’ ভিডিওটি ছড়িয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করা হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। বললেন, এর জের পড়ছে তাঁর পরিবার, বন্ধুদের ওপর। তাঁর সংস্থা ‘ধর্ম প্রোডাকশনস’-এর সহকর্মীদের অযথা বদনাম করা হচ্ছে, বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। তাঁদের তামাশার পাত্র করা হচ্ছে। বিবৃতির শেষাংশে জানানো হয়েছে, ‘আশা করব সংবাদ মাধ্যম একটু নিয়ন্ত্রণ দেখাবে। নয়তো এই ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং চরিত্রহননের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া আমার আর কোনও উপায় থাকবে না।’
প্রতিবেদনে- তানভি সুলতানা