নিজস্ব সংবাদদাতা : ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাগদা ব্লকের হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস। বিরোধী আসনে বিজেপি। পঞ্চায়েত বোর্ড চালাতে বিরোধীরা সহযোগিতা করলেও উন্নয়নের কাজে বিরোধী তৃণমূলের একটা গোষ্ঠী। বাগদাতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কোনো কথা না। এই গোষ্ঠী কোন্দলে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৎকালীন ক্যাবিনেট মন্ত্রী, দাপুটে আইপিএস উপেন বিশ্বাস পরাজিত হয়ে বিজয়ী হন বাম কংগ্রেস জোটের দুলাল বর। এখন দুলাল বাবু বিজেপিতে। উপেন বাবুকে হারানোর কান্ডারি তরুন ঘোষ তৃণমূলে ফিরে এসে বর্তমানে তৃণমূল বাগদা বিধানসভার চেয়ারম্যান ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। এখনও গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে জর্জরিত বাগদার তৃণমূল দল।
আম্ফান কেলেঙ্কারি নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত গুলোর বিরুদ্ধে। যে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। যদিও বাগদা ব্লকের হেলেঞ্চাতে উল্টো কথা প্রচলিত। মানুষ বলছে, বিরোধীদের থেকে নিজেদের পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূলেরই একটা গোষ্ঠী। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্যা তথা বাগদা ব্লক তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী মাধুরী সরকার। তিনি তরুণ ঘোষের অনুগামী বলে প্রচলিত।
প্রাথমিকের শিক্ষিকা মাধুরী দেবী সরাসরি ফেসবুকে পঞ্চায়েত প্রধান চায়না বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তাঁদের মূল অভিযোগ, প্রধান আম্ফানের ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি দেখিয়েছেন। টেন্ডার ছাড়া রাস্তা তৈরী সহ আরও কিন্তু অভিযোগ এনেছেন তাঁরা। তাঁদের আরও প্রচার, আম্ফন দুর্নীতির জন্য প্রধান পঞ্চায়েতের বিজেপির বিরোধী দলনেতাকে বাইক কিনে দিয়েছেন। যদিও প্রধানের দপ্তর থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে জানানো হয় নিয়ম মেনে সব কাজ হয়েছে। তাঁরা যেকোনো প্রকার তদন্তের সামনে আসতে রাজি।
এলাকার মানুষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এসব অভিযোগ মানতে রাজী না। তাঁদের কথা, মাধুরী দেবী সিপিএম থেকে তৃণমূলে এসেছেন। এখন হয়তো অন্য কোনো দলে যাবার পরিকল্পনা করছেন। যদিও আমরা প্রতিক্রিয়ার জন্য মাধুরী দেবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। আর বাইক কিনে দেওয়ার প্রসঙ্গে বিজেপির বিরোধী দলনেতার ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানানো হয়, আম্ফনের অনেক আগে বিরোধী দলনেতা নিজে বাইক কিনেছেন। তাঁর এমন দৈন্যতা নেই যে তৃণমূলের থেকে বাইক নিয়ে নিজেকে বিক্রি হতে হবে।
পঞ্চায়েত প্রধান চায়না বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, তিনি তৃণমূলের সৈনিক। জননেত্রী মমতা ব্যানার্জী তাঁকে প্রধানের চেয়ারে বসিয়েছেন জনগণের কাজ করার জন্য। প্রধান হিসাবে তিনি স্বচ্ছ ভাবে কাজ করে চলেছেন। তবে দলের ভেতরের এমন অসহযোগিতা নিয়ে প্রধান মুখ খুলতে চাননি। সবটাই সাধারণ মানুষ এবং দলের নেতৃত্বের উপর ছেড়েছেন তিনি।
হেলেঞ্চা এলাকার এক পুরোনো তৃণমূল নেতা আমাদের বলেন, কারো কোনো অভিযোগ থাকলে দলের শৃঙ্খলা মেনে দলের অভ্যন্তরে বলা উচিত। আর প্রকাশ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে দল যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে পরবর্তীতে এমন ঘটনা আরও ঘটবে বলে তিনি মনে করেন। এখন দেখা যাক দল না ব্যক্তি? তৃণমূলে কোনটা বড়ো !!