লকডাউনের সময় যেখানে লুডোই ভারতের জাতীয় খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই সময় সব বাড়িতেই নিত্য টুকটাক ঝামেলা লেগেই থাকে, তবে এই ঘটনা একেবারেই নজির বিহীন। করোনাকে হারানোর জন্যে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে ঘরে বন্দী দেশের মানুষেরা। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য বেছে নিয়েছেন নানা ইনডোর গেম। এরই সঙ্গে নিজের হারানো পরিচয় ফিরে পেয়েছে আবার লুডো (Ludo)। কিন্তু সেই খেলাকে কেন্দ্র করেই বাবা-মেয়ের সম্পর্কে ধুন্ধুমার। বাবা- মেয়ের সম্পর্কে চিরদিনের মতো চির ধরিয়ে দিল জনপ্রিয় ইনডোর গেম লুডো! লুডো খেলতে বসে বাবা ধোঁকা দিয়েছে, এই অভিযোগ নিয়ে সোজা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বয়স ২৪ এর এক মেয়ে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, কিছুদিন আগে পরিবারের সঙ্গে বসে লুডো খেলছিলেন সেই মেয়েটি। সেই সময় মেয়েটির বাবা মেয়েটির একটি পাকা ঘুঁটি কেটে দেন। বাবা যে তাঁর ঘুঁটি কেটে দিতে পারে, বিশ্বাসই করতে পারেননি মেয়েটি। ‘বিশ্বাস ভঙ্গ’ হওয়ায় ভোপাল ফ্যামিলি কোর্টের দ্বারস্থ হয় মেয়েটি। আদালতের এক মহিলা আধিকারিক সরিতা জানিয়েছেন, “মেয়েটির কাজ দেখে আমি অবাক হয়েছি। এরকম কার্যকলাপ কোনদিন আমি দেখিনি। সে তার বাবার প্রতি সমস্ত বিশ্বাস হারিয়েছে, মেয়েটির বক্তব্য। যে বাবা তাঁকে পৃথিবীর সমস্ত সুখ দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন, তিনি মেয়েকে পরাজিত করার জন্য বিশ্বাসঘাতকতার কাজ করতে পারেন, তা মেয়েটি ভাবতেই পারছে না।”
মেয়েটি তাঁর বাবার সমস্ত সম্পর্ক ভেঙ্গে ফেলার কথা জানিয়েছে। মেয়েটির বক্তব্য, “বাবা তাকে খুশি করার জন্য সমস্ত কিছু করতে পারে এটাই তার বাবা নাকি তাকে বলতো। ওই দিন আমার বাবার আমার খুশির জন্য উচিৎ ছিল গেমটা হেরে যাওয়া। কিন্তু বাবা তা করেনি। আমার সমস্ত বিশ্বাস, ভালোবাসা ভেঙে দিয়েছে বাবা।” মেয়েটির দেখে অবাক আদালতের সকলে। ঘটনা প্রসঙ্গে আদালতের কাউন্সেলর সরিতা জানিয়েছেন, মেয়েটির সঙ্গে চারদফার কাউন্সিলিং সেশন করা হবে। তবে এই প্রথম নয়। এর আগে এই লুডো খেলায় হেরে গিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকা সম্পর্ক ভাঙা, স্বামী স্ত্রীকে মারধর এমনকী খুনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। তবে এভাবে সোজা আদালতে যাওয়ার ঘটনা একেবারে নতুন বলেই দাবি ওয়াকিবহাল। বাবা মেয়ের সম্পর্কটা কি এতটাই ঠুনকো হয়ে দেখা দিতে পারে! যে সামান্য লুডো খেলা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বাবার বিরুদ্ধে মেয়ে! এই ঘটনা আমাদের প্রত্যেকের মনেই গভীর দাগ রেখে গিয়েছে।
প্রতিবেদনে- দেবিকা দাস