অনতিকাল থেকেই মানুষের মনে অন্য গ্রহে জীবের অবস্থান নিয়ে কৌতুহল এর সীমা নেই , আর সেই কৌতুহল এ আরো এক চাদর চড়ালো ইন্টার্নেশনাল টিম অফ অ্যাস্ট্রোনমি।
গতকাল ১৪ই সেপ্টেম্বর তারা প্রেসের সামনে আনে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে তারা শুক্র গ্রহের বায়ুমন্ডলে খুঁজে পেয়েছেন এক অজানা গ্যাস, যার নাম দেওয়া হয়েছে ফসফিন ।তাদের মতে ফসফিন হল এক বর্ণবিহীন, গন্ধযুক্ত গ্যাস যেটি শুধুমাত্র কিছু ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপাদন করা যায়। সাধারণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এই গ্যাসের উৎপত্তি সম্ভব নয় এবং সেই ব্যাকটেরিয়াগুলো এই গ্যাস অক্সিজেনের অবর্তমানে তৈরি করতে সক্ষম বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানী মন্ডলী। কাগজে-কলমে এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর পরই এই খবর আলোড়ন ফেলেছে বিশ্ব বিজ্ঞানীমহলে । বুধ গ্রহের বায়ুমন্ডলে এই গ্যাসের পরিমাণ লক্ষ ভাগের এক ভাগ হলেও এই তথ্য বিজ্ঞানের প্রসারে অন্যতম পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন নেচার অ্যাস্ট্রোনমি কাউন্সিল।
উল্লেখিত জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে বুধ গ্রহের যে প্রাণীর অবস্থান আছে তা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না এইযে ফসফিন গ্যাসের অবস্থান সেটা যে শুধুমাত্র ব্যাকটেরিয়া থেকে হতে পারে তার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি তাদের মতে এই ফসফিন অন্য কোন গ্রহের ঘর্ষনে বা বাইরে থেকে আসা কোনো উল্কাপাতের ফলেও তৈরি হতে পারে ।বলাবাহুল্য এই আবিষ্কারটি 2017 সালে সম্পন্ন হয়েছিল, তখন থেকে বিজ্ঞানীরা ক্রমাগত তিন বছর এই গ্যাস টিকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ এর মাধ্যমে বিবেচনাযোগ্য করে তোলেন এবং গতকাল এই তথ্য প্রকাশ করেন।
কলকাতার আই আই এস পি আর এর দিব্যেন্দু নন্দী এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে সর্বদায় অতি প্রাকৃতিক বস্তু অবশ্যই একটি বিজ্ঞানের দিকে বড় পদক্ষেপ, কিন্তু তার মানে আমি বলতে পারি না যে শুক্র গ্রহে প্রাণী আছেই ।তবে এই যে ফসফিন সেটা শুধুমাত্র কোন বিক্রিয়ার ফলে উৎপাদন সম্ভব হলে এক বিশাল সম্ভাবনা থেকে যায় অদূর ভবিষ্যতে কোন আবিষ্কারের।
পুনে রিসার্চ ইউনিভার্সিটি সেন্টার অফ অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের ডাইরেক্টর সমোক রায়চৌধুরী আরো বলেন যে শুক্রের উত্তাপ উষ্ণতা এখন এতটাই বেশি যার ফলে নতুন জীবন জন্মানোর সম্ভাবনা কম তবে এক বিরাট সম্ভাবনা আছে যে এই ফসফিন উৎপাদন হয়েছিল যখন বুধ গ্রহ বসবাসের উপযোগী ছিল অর্থাৎ যখন গ্রহের উষ্ণতা বসবাসযোগ্য ছিল।
এই প্রসঙ্গে ইসরো বলে যে ১৯৬০ দশক থেকে ভারত চেষ্টা করে যাচ্ছে শুক্র গ্রহে আবর্তনের তবে এখন সেই অভিযানের চাহিদা অনেকটা বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে শুক্র যানের মাধ্যমে আমরা এই তথ্যের সত্যতা বিচারের চেষ্টা করব এবং আগামী শুক্র মিশনের উদ্দেশ্য হবে গ্রহে জীবের খোঁজ।
লেখায়- সোহেল সারওয়ার