আগামী একুশে অগাস্ট দিনটা যে কারণে বিশেষ স্মরণীয় সেটা হলো ঐদিন দেবতুল্য শিল্পী বিসমিল্লা খানের মৃত্যু বার্ষিকী! বিসমিল্লা প্রেমীরা হয়তো দিনটার যোগ্য কদর্ করবেন।
কিন্তু তার কিছুদিন আগেই এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর হাদ্হা সরাই এর বাড়ি ধ্বংস করলেন আত্মীয়রাই। ভেঙে ফেলা হয়েছে তার সব স্মৃতি ও আসবাব।
এই বাড়িটা ছিল বিসমিল্লার প্রিয়তম। ওখানেই দোতলার একটা ঘরে প্রতিদিন চলতো তার অনুশীলন। একসময় আমেরিকা তেও থাকার কথা হয়েছিল তার কিন্তু তিনি যেতে চাননি এই বাড়ি ছেড়ে। তার রেওয়াজের ঘর গুলো ধ্বংস প্রাপ্ত এখন কিন্তু এখন সেই ঘর গুলোর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে সুরের আস্ফালন। সেই বাড়িটা ভেঙে নাকি তৈরি হবে বিরাট কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স! এটাই তো নিওলিবারেল ইকোনমির পলিসি!
২০০৬ এতে বিসমিল্লা র মৃত্যুর পরে এই বাড়িটাকে মিউজিয়াম করার জন্য আবেদন করেছিল ভক্তরা। তার জন্য একটা সংগ্রহশালা তৈরি হলে তার স্মারক, তার বিভিন্ন আসবাব গুলো সকলের দেখার জন্য রাখা যেতে পারতো। তার মতো একজন সানাই মায়াস্ট্রোর বাড়ি যার সানাই ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রতিটা কোনায়, কেনো হেরিটেজ আখ্যা পাবেনা! এই নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। কিন্তু গা করেনি সরকার।
বিসমিল্লা খানের মেয়ের মতো পালিতা সোমা ঘোষ নিজে একজন সংগীত শিল্পী। তিনি এই ঘটনাতে যথেষ্টই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে তিনি এই ঘটনাতে ভয়ানক ভেঙে পড়েছেন। তার ঘর গুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে! ভাঙা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আসবাবও।
ওই ঘর গুলোর ঐতিহাসিক মূল্য যে কি সেগুলো ওই বেবাক মানুষ গুলো বোঝেনা। ওটা একটা সংগীতের পবিত্র উপাসনা ক্ষেত্র ছিল। তিনি অবিলম্বে তার সমস্ত আসবাব পত্র সংরক্ষণের দাবি জানাবেন।
গত বারো ই অগাস্ট প্রথম ভাঙা হয় তার রেওয়াজের ঘরটা হাদ্হা সরাই এর ভিক্ষামশাহ লেনের ধারে। এই মুহূর্তে ওই বাড়ির উত্তরাধিকারী এই সময় বিসমিল্লার পাঁচ ছেলেরই একজন্, মেহেতাব হুসেন। তারা অবশ্য ঘটনা অস্বীকার করে বলেছেন সেটা ভাঙা হয়েছে স্থানীয় শোরুম তৈরির জন্য। বিসমিল্লার ছোট ছেলে নাজিম হুসেনকে এবিষয়ে প্রশ্ন করলে সে বলে, তিনি কিছু জানতেন না এর বিষয়ে। বিষয়টা খতিয়ে দেখবেন তিনি। কিন্তু ২৪ অগাস্ট এর আগে না। তিনি ২৪ অগাস্ট বাড়ি ফিরে সিদ্ধান্ত নেবেন এর ব্যাপারে। আদৌ কি ব্যবসায়ী দের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে বিসমিল্লার মত সানাই মায়েস্ট্রোর বাড়ি? নাকি সেই ঐতিহ্যের সমাধির ওপর তৈরি হবে কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স! সেই নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ!